উম্মে হারাম বিনতে মিলহান
উম্মে হারাম বিনতে মিলহান মুহাম্মাদ এর একজন সাহাবা ছিলেন। তিনি উম্মে সুলাইমের বোন ছিলেন এবং মুহাম্মাদ এর খালা ছিলেন।
নাম ও বংশ পরিচয়
[সম্পাদনা]উম্মে হারামের আসল নাম অজ্ঞাত রয়েছে। এটি তার ডাক নাম আর এ নামেই তিনি ইতিহাসে পরিচিত। উম্মে হারাম মদিনার বিখ্যাত খাযরাজ গোত্রের নাজ্জার শাখার কন্যা। তার পিতার নাম মিলহান ইবনে খালিদ । তিনি নারী সাহাবা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান বোন এবং প্রখ্যাত সাহাবা আনাস ইবনে মালিকের খালা।[১]
ইসলাম গ্রহণ
[সম্পাদনা]উম্মে হারামের গোত্রের সবাই ইসলামের সূচনা লগ্নেই মদিনাতে বসেই ইসলাম গ্রহণ করেন এবং ইসলামী জ্ঞান চর্চা,যুদ্ধে ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন।
জীবনী
[সম্পাদনা]আত তাহযীব গ্রন্থকার বলেছেন, উম্মে হারামের স্বামী আমর ইবনে কায়স আল আনসারী।[২]। তবে অধিকাংশ গ্রন্থকার বলেছেন,তার স্বামীর নাম উবাদা ইবনে আস সামিত। ইবনে সাদ বলেছেন, উবাদা ইবনে আস সামিত প্রথম ও আমর ইবনে কায়স আল আনসারী দ্বিতীয় স্বামী ছিলেন।[৩] তার স্বামী ৩৪ হিজরিতে ফিলিস্তিনের রামলায় মৃত্যুবরণ করেন।[৪][৫]
উম্মে হারামের পরিবার মদিনার মসজিদের কুবার নিকট বসবাস করতেন। মুহাম্মাদ উম্মে সুলাইমের পুত্র আনাস ইবনে মালিকের নিকট তাদের বাড়িতে যেতেন মাঝে মাঝে। সেখানে গিয়ে বিশ্রামও নিতেন আহার করতেন মাঝে মাঝে।[৬][৭][৮] মাঝে মাঝে তাদের সবার সাথে নামাজও আদায় করেছেন।[৯] উম্মে হারাম বিনতে মিলহান মুহাম্মাদ এর খালা ছিলেন।[১০] মুহাম্মাদ উম্মে হারামকে অত্যন্ত সম্মান করেছেন। একবার মুহাম্মাদ মাথার চুল বিলি কেটে দিয়েছিলেন যার ফলে মুহাম্মাদ তার কোলে ঘুমিয়ে পরেছিলেন।[১০]
উম্মে হারাম বিনতে মিলহানের তিন ছেলে ছিলোঃ
- কায়েস, পিতা- আমর ইবনে কায়স আল আনসারী
- আবদুল্লাহ, পিতা- আমর ইবনে কায়স আল আনসারী
- মুহাম্মদ, পিতা- উবাদা ইবনে আস সামিত [১১][১২]
যুদ্ধে অংশগ্রহণ
[সম্পাদনা]ইসলামের তৃতীয় খলিফা উসমানের খিলাফতের সময় সিরিয়ার আমীর মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ান ২৭ হিজরিতে একটি নতুন নৌ বাহিনী গঠন করে সাগর দ্বীপ কুবরুস আক্রমণ (সাইপ্রাস অভিযান) করেছিলেন। এই কুবরুস দ্বীপ ছিল বাইজান্টাইন রোমান শাসিত একটি অঞ্চল। এই অভিযানে উম্মে হারাম তার স্বামী উবাদা ইবনে আস সামিতের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছিলেন।[১৩][১৪]
মৃত্যু
[সম্পাদনা]কুবরুস বিজয় শেষে মদিনাতে ফেরার পথে পশুর বাহন থেকে পরে গিয়ে ভীষণ আঘাত পান এবং এই আঘাতেই মৃত্যুবরণ করেন। সাগর দ্বীপ কুবরুসের মাটিতেই তাকে দাফন করা হয়।[১৫][১৬][১৭] হিশাম ইবনে আল গায বলেন, আমি ৯১ হিজরিতে বাকাকীস সাগর উপকূলের কুবরুসে তার কবর দেখেছি এবং তার পাশে দাড়িঁয়েছি।
হাদিস বর্ণনা
[সম্পাদনা]উম্মে হারাম বিনতে মিলহান মুহাম্মাদ থেকে মোট ৫টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তার থেকে যেসব সাহাবা হাদিস বর্ণনা করেছন,
- আনাস ইবনে মালিক
- আমর ইবনে আসওয়াদ
- উবাদা ইবনে আস সামিত
- আতা ইবনে ইয়াসার
- ইয়ালা ইবনে শাদ্দাদ ইবনে আওস প্রমুখ ব্যক্তিবর্গ।
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ [আস-সীরাহ্ আল-হালাবিয়্যা-৩/৭৩]।
- ↑ [আত-তাহযীব-১২/৪৬]।
- ↑ [তাবাকাত-৮/২৬৮]।
- ↑ [তাহযীবুল আসমা‘ ওয়াল লুগাত-১/২৫৬,২৫৭]।
- ↑ [আল-আ‘লাম-৩/২৫৮]।
- ↑ [উসুদুল গাবা-৫/৫৭৪]।
- ↑ [আল-ইসতী‘আব-৪/৪২৪]।
- ↑ [আয-যাহাবী: তারীখ-৩/৩১৭]।
- ↑ (সহীহ মুসলিম-২/১২৮)।
- ↑ ক খ [নিসা‘মিন ‘আসর আন-নুবুওয়াহ-৪৪]।
- ↑ [তাবাকাত-৮/৩১৮]।
- ↑ [আল-ইসাবা-৪/৪৪২]।
- ↑ [তারিখু দিমাশক- ৪৮৬]।
- ↑ [বুখারী : আল জিহাদ; হিলয়াতুল আওলিয়া ওয়া তাবাকাত আল-মাশাহীর ওয়াল আল-আ‘লাম-২/৬১]।
- ↑ [নাসাবু কুরায়শ-১২৪-১২৫]।
- ↑ [দালায়িল আন-নুবুওয়াহ-২/৭১২]।
- ↑ [ সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং- ১৬৪৫ ]।