পার হয়েছে অনেক বছর, অনেক অনেক আগে,
সাগর পাড়ে এক সে দেশে, স্মৃতিতে আজ জাগে,
ছিলো সে এক রূপকুমারী, চিনতে তাকে পারো;
ব্রজরানী (নাজিয়া নাজ) নাম ছিলো যে তারও!
সেই রূপসীর ভাবনা জুড়ে ভাবনা শুধুই থাকে
বাসবে ভালো সে আমাকেই, আমিও যেন তাকে।
ছিলাম আমি কিশোর রাজা, সেও কিশোরী রানী,
সেই সে দেশে, নিকটে যার সমুদ্র, নীল পানি;
আমরা ছিলাম প্রেমের চেয়েও অধিক প্রেমের প্রেমে-
আমরা দুজন, আমি এবং সেই সে ব্রজরানী;
এমন প্রণয়, দেবদূতের শুভ্র-ডানার ফ্রেমে
সুরক্ষিত, দুই জনেরই জীবন-হৃদয়খানি।
এটাই কারণ, এখন থেকে অনেক অনেক আগে,
সেই যে দেশে, রূপখানি যার সাগর ঘেঁষে জাগে,
ভয়াল মেঘে উঠলো তুফান হাড়-কাঁপানো শীতে,
ব্রজরানী, নাজকে আমার হঠাৎ কেড়ে নিতে;
অহমিকা নিয়ে যাতে জ্ঞাতিরা তার আসে__
ছিনিয়ে নিতে; না-থাকে সে, এই হৃদয়ের পাশে;
কণ্ঠটি তার স্তব্ধ ক'রে কবরই দেয় শেষে
সাগর-ঘেঁষা এই সবুজের দেশে।
ফেরেস্তারা অর্ধেকও নয় সুখি, গোপন প্রাণে,
এ প্রেম দেখে, ঈর্ষাকাতর, ফিরেই গেল তারা!
সত্যি! এটাই কারণ ছিলো__(সব মানুষই জানে,
সাগর পাড়ের এই রাজ্যে বাস করতেন যারা)
কৃষ্ণ-মেঘের তুফান এলো রাত্রিকালে সেই,
তুমুল শীতে মারলো আমার ব্রজরানীকেই।
কিন্তু এ-প্রেম অন্যরকম, প্রেমান্তরের মত শক্তিশালী,
তাদের চেয়েও, যারা, হাজার বছর বেসেছিলো_
তাদের চেয়েও, যারা, ছিলো বিপুল জ্ঞানের ডালি
এবং উর্ধে স্বর্গলোকের ফেরেস্তা-মিছিলও
কিংবা নিচে, সাগরতলের পিশাচ প্রতাপশালী
কোনওদিনও পারবে না তো কোনই চক্র এঁকে
আত্মা আমার করতে জুদা ব্রজরানীর থেকে।
কারণ, চাঁদও কিরণ ছড়াবে না, ছড়াবে শুধু শোক,
যদি না এ-চোখ স্বপ্ন দ্যাখে তার;
আকাশ জুড়ে তারকা নয়, জ্বলজলে দুই চোখ
দেখবো দেখবো আমি ব্রজরানীটার;
এমন করবে রাত্রিকালীন জোয়ারগুলি, শোবো তারই পাশে,
ওহ, সে তো প্রিয়া আমার, জীবন আমার, শিল্পিত এক ক্ষত!
সাগর পাড়ে থাকবো শুয়ে, কবরে তার, ব্রজরাজের মত;
যে-কবরে আওয়াজ আসে, নীল সাগরের কান্না ভাসে...অবিরত
* Bengalized by Rahman Henry
** Original:
Annabel Lee - Poem by Edgar Allan Poe
beautiful translation very good and crystal clear translation